দেশের অর্থনীতির প্রায় সব সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা দিয়ে শুরু হয়েছিল ২০২০ সাল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রভাব। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনীতির সব সূচক এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আমদানি ও রফতানি আয়ে কোনও প্রবৃদ্ধি নেই। সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষ। বিনিয়োগ একেবারেই হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে না। সরকারের রাজস্ব আয় নেই বললেই চলে। ভয়াবহভাবে কমে গেছে তৈরি পোশাকের অর্ডার। প্রবাসীরা অল্প করে রেমিট্যান্স পাঠালেও অন্য যে কোনও সময়ের চেয়ে কমেছে রেকর্ড পরিমাণ।
আরও খারাপ খবর হচ্ছে, ঋণ করে কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছে গার্মেন্ট মালিকরা। একইভাবে সরকারও ঋণ করে কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিচ্ছে। চলতি বছরে সরকার ৭৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ ইতোমধ্যে নিয়ে ফেলেছে, যা স্বাধীনতার পর থেকে এক বছরের হিসেবে সর্বোচ্চ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে যে, এখন সরকারকে ঋণ দিতে গিয়ে এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে ব্যাপকহারে রিজার্ভ মানি (আরএম) বা হাই-পাওয়ার্ড মানি বাজারে সরবরাহ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই রিজার্ভ মানি হচ্ছে ছাপানো টাকা।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম রাজস্ব আদায় এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই সরকারকে ব্যাংক থেকে প্রচুর ঋণ নিতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের পুরো অর্থনীতি বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়ছে বলেও আশঙ্কা করছেন তিনি।
তিনি বলেন, এই মুহুর্তে টাকা ছাপিয়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আর প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে গেলে অন্তত ৩৭ থেকে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ছাপতে হবে। অবশ্য এসব মোকাবিলায় এরইমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।
শেয়ারবার্তা / মিলন