পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে পূরণ করা হয়েছে চেয়ারম্যানের শূন্যপদ। তারপরেও একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও দুই অধ্যাপক কমিশনার হিসেবে নেতৃত্বে আসতে চাইছেন। কিন্তু বাজার সংশ্লিষ্টরা এর বিরোধিতা করছেন।
চলমান করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট পুঁজিবাজারের ক্রান্তিলগ্নে এই পদে বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বয়ে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া জরুরী বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। যাতে বিভিন্ন সেক্টরের সম্মিলিত জ্ঞানের মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নেওয়া যায়। এজন্য চেয়ারম্যানের শূন্য পদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিয়ে পূরন হওয়ায় কমিশনারের শূন্য পদগুলোতে অন্যান্য খাতের দক্ষ জনবলের পক্ষে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
গত ৩ মে অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বিদায় নেওয়ার পর থেকে বিএসইসিতে ৩টি কমিশনার পদ ফাঁকা রয়েছে। এই পদে বর্তমানে ৪জন সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। সবাই সামর্থ্য অনুযায়ি নিয়োগ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যে তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন অধ্যাপক রয়েছেন।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পাশাপাশি অন্যান্য সেক্টর থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া জরুরী। এতে করে সব সেক্টরের জ্ঞানের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে। এক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত পেশাদার হিসাববিদ, ব্যাংকার, আমলা ইত্যাদি সেক্টর থেকে শূন্য কমিশনার পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
এর আগে ২০১০ সালের ধস পরবর্তী পূণগর্ঠিত কমিশন সাজানো হয়েছিল বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বয়ে। যাতে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনকে। এছাড়া ৪ কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা, একজন পেশাদার হিসাববিদ, একজন বিচারক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিএসইসিতে ৪টি কমিশনার পদ। এসব পদে একই সেক্টরের পরিবর্তে বিভিন্ন সেক্টর থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে পারলে ভালো। এতে করে বিভিন্ন সেক্টরের দক্ষ কমিশনারদের থেকে সার্বিক বিষয়ে মতামত আসবে। ফলে শেয়ারবাজারের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।
দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সাবেক সভাপতি দেওয়ান নুরুল ইসলাম বলেন, একাডেমিকভাবে অভিজ্ঞদের পাশাপাশি বাস্তবিক জ্ঞাপনসম্পন্ন ব্যক্তিদেরকেও বিএসইসিতে কমিশনার হিসাবে নিয়োগ দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে এই কাজ করা যেতে পারে। অতিত রেকর্ড ভালো এমন কাউকে বেছে কমিটি নিয়োগ দেবে।
শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির বড় জায়গা উল্লেখ করে দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সাবেক সভাপতি এ.এস.এম শায়খুল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজার ভবিষ্যত অর্থনীতির চালিকাশক্তি। এমতাবস্থায় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) যোগ্য ও সৎ কমিশনারের কোন বিকল্প নেই। সার্চ কমিটির মাধ্যমে যাছাই করে বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বয়ে যোগ্য ও সৎ কমিশনার নিয়োগ করা যেতে পারে।
শেয়ারবার্তা / আনিস