1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
খায়রুল কমিশনের ৯ বছরে সবচেয়ে কম আইপিও
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম

খায়রুল কমিশনের ৯ বছরে সবচেয়ে কম আইপিও

  • আপডেট সময় : বুধবার, ৬ মে, ২০২০
IPO-5

প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনে উল্টো পথে হাটছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। দেশের অর্থনীতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আইপিও বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক হলেও কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৯ বছরে সবচেয়ে কম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় পুঁজিবাজারের আকারকে ক্রমান্বয়ে ছোট করে তুলছে।

দেশের অর্থনীতির সঙ্গে পুঁচিবাজার এগোতে পারছে না বলে সব মহলেই সমালোচনা করা হয়। এই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিবর্তে পুঁজিবাজারকে উৎস করার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। কিন্তু গত ৯ বছরে তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। বরং উল্টো পথে হেটেছে কমিশন। এই সময় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বাড়ানোর দরকার পড়লেও কমিয়েছে।

দেখা গেছে, বিএসইসি গঠনের ২৭ বছরে (১৯৯৩) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ২৮৫ কোম্পানি। এরমধ্যে কমিশন গঠনের প্রথম ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হয়েছে ১০০ কোম্পানি। আর দ্বিতীয় ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হয়েছে ৯৪টি। বাকি ৯ বছরে অর্থাৎ খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন সময়ে তালিকাভুক্ত হয়েছে ৯১টি। অথচ এই সময়ে দেশের অর্থনীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নিত হয়েছে।

পুঁজিবাজারের এক ক্রান্তিলগ্নে কমিশনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন খায়রুল হোসেন। যেসময় পুঁজিবাজার ছিল নানা অনিয়মে জর্জরিত, ছিল না সুশাসন ও কমিশন থেকে চাকরী ছেড়ে চলে যাচ্ছিল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেই দুঃসময়ে অনিয়ম দূর করা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করাই ছিল খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের চ্যালেঞ্জিং কাজ। তবে এই কাজ করতে গিয়ে আইপিওতে পিছিয়ে পড়েছে তার নেতৃত্বাধীন কমিশন।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক বড় হয়েছে। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজার সেভাবে এগোচ্ছে না। এই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে পুঁজিবাজারের অংশগ্রহণ বাড়ানো দরকার। এক্ষেত্রে বেশি বেশি করে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনতে হবে।

গত ৯ বছর আগে জিডিপির তুলনায় পুঁজিবাজারের আকার ছিল ৫০.৭০ শতাংশ। যা এখন ১৩.৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এর অন্যতম কারন হিসাবে রয়েছে দেশের অর্থনীতি যে হারে এগোচ্ছে, সে হারে পুঁজিবাজারে কোম্পানি তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। এছাড়া ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারের মন্দার কারনেও অনুপাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

এদিকে জিডিপিতে পুঁজিবাজার পিছিয়ে পড়ার আরেকটি অন্যতম কারন হিসেবে রয়েছে আর্থিক খাতের মন্দাবস্থা ও পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেওয়া। একসময় ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানির শেয়ার চাঙ্গা থাকলেও এখন তলানিতে। অথচ পুঁজিবাজারে এই খাতের অংশগ্রহণ বেশি। যাতে চাঙ্গা মূহূর্তে জিডিপির তুলনায় পুঁজিবাজারের অনুপাত বেশি ছিল। কিন্তু ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানির শেয়ারের তলানিতে নেমে আসায় অনুপাতও কমেছে। এছাড়া ২০০৯-১০ সালে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার সুযোগ ছিল বেশি। আর সেই সুযোগের থেকেও অনেক ব্যাংক বেশি বিনিয়োগ করে। আর এখন বিনিয়োগের সুযোগ প্রায় ৪ ভাগের ১ ভাগে কমিয়ে আনার পরেও অনেক ব্যাংকের বিনিয়োগ ঘাটতি রয়েছে।

এদিকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের মূলধন জিডিপির তুলনায় অনেক পিছিয়ে। এমনকি পাকিস্তানের থেকেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা রয়েছে। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাড়ানো দরকার হলেও ২০১৯ সালে তা আরো কমেছে।

বিএসইসির আরেক সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপন একটি বড় বাধা। কিন্তু কোন ডায়নামিক উদ্যোক্তা পুঁজিবাজার থেকে ফান্ড সংগ্রহের জন্য ২ বছর অপেক্ষা করবে না। তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ দেওয়ার জন্য বসে রয়েছে। এমতাবস্থায় তারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনার জন্য এই সমস্যার বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তার প্রয়োজন।

বাংলাদেশে এখনো পুঁজির উৎস হিসেবে উদ্যোক্তারা পুঁজিবাজারের চেয়ে ব্যাংক ঋণের উপর বেশি নির্ভরশীল। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের চেয়ে অনেক বেশি। গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজারের অবস্থা আগের তুলনায় শক্তিশালী হলেও এখান থেকে মৌলিক খাতে মূলধন স্থানান্তরের প্রবণতা অনেক কম।

শেয়ারবার্তা/সাইফুল

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ