গত কয়েক বছরে ব্যাংক খাতের ওপর দিয়ে অনেক চাপ গেছে। এরপরও এপ্রিল থেকে সব ঋণের সুদ ৯ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর সুদের আয় ২৫ শতাংশ কমে গেছে। একটা ব্যাংকের মূল আয় আসে সুদ থেকে। ব্যাংক খাতে আমানতের সুদ প্রায় ৭ শতাংশ। দেশে আনুষ্ঠানিক মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের বেশি। তাতে আমানতকারীরা প্রকৃতপক্ষে কিছুই পাচ্ছেন না। ৭ শতাংশে আমানত নিয়ে ৯ শতাংশে ঋণ দেওয়াও কঠিন। কারণ, এ দেশে ব্যাংকের পরিচালন খরচ অনেক বেশি। ব্যাংকভেদে এ খরচ ৩ থেকে ৪ শতাংশ।
এ পরিস্থিতিতে নতুন করে দুই মাসের সুদ ব্লক হিসাবে রাখতে বলা হয়েছে। আমার হিসাবে, তাতে সব ব্যাংক মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা আয় কমবে। এতে ছোট ব্যাংকগুলোর ২০ থেকে ৫০ কোটি আর বড় ব্যাংকগুলোর ২০০-৩০০ কোটি টাকা লোকসান হবে। তাতে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের শেয়ারের দাম আরও কমবে। এমনিতেই শেয়ারবাজার খারাপ, তা আরও খারাপ হবে।
এদিকে, দুই মাসের সুদ আয় থেকে সরকার ৭০০ কোটি টাকা করপোরেট কর পেত, সেটা এখন পাবে না। ব্যাংকগুলোর ঋণমান কমে যাবে। তাতে ঋণপত্র বা এলসি খোলার খরচ বাড়বে। শেষ পর্যন্ত যার চাপ পড়বে ব্যবসায়ীদের ওপরই।
দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি ব্যাংক খাত। আমরাও গ্রাহকদের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তবে সম্পূর্ণটা ব্যাংকের ওপর চাপিয়ে দিলে তাতে পুরো ব্যাংক খাত বিপদে পড়ে যাবে। সরকার সব খাতকে প্রণোদনা দিচ্ছে, ব্যাংক খাত বাইরে থাকবে কেন?
সেলিম আর এফ হোসেন: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্র্যাক ব্যাংক