1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সুখবর আসছে
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ এএম

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সুখবর আসছে

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৪ মে, ২০২০

তৈরি পোশাকের রপ্তানিতে সুখবর আসছে। করোনার কারণে এখাতের বাতিল এবং স্থগিত হওয়া আদেশ ফেরত আসছে। এখাতের বড় অংশই পুনর্বহাল করেছে বিদেশি ব্র্র্যান্ড এবং ক্রেতারা। এদিকে ইউরোপ আমেরিকায় ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে নতুন রপ্তানি আদেশও আসতে শুরু করেছে। নতুন রপ্তানি আদেশের উল্লেখযোগ্য অংশ আগামী শীত মৌসুমের জন্য। অনেকে বলছেন, নানা কারণে চীন তৈরি পোশাকের বাজার কিছুটা হারাতে পারে। ফলে এটা বাংলাদেশের জন্য বড় একটি সুযোগ তৈরি করবে। পোশাক রপ্তানিকারক একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

২৮ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং একক বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ৮০ শতাংশেরও বেশি রপ্তানি হয়ে থাকে। এই দুই অঞ্চলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তীব্রতার সময়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে বেশিরভাগ ব্র্যান্ড এবং ক্রেতা একের পর এক রপ্তানি আদেশ বাতিল করে। লম্বা সময় ধরে শোরুম এবং মার্কেট বন্ধ থাকার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেন তারা। আমদানিকারক এবং রপ্তানিকারকের মধ্যকার চুক্তিতে উল্লেখিত দরের চেয়ে কম মূল্য এবং বিলম্বে মূল্য পরিশোধের ঘটনাও ঘটে। পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর পরিসংখ্যান বলছে, বাতিল এবং স্থগিত পোশাকের মূল্য অন্তত ৪০০ কোটি ডলারের মতো। এখনও রপ্তানি আদেশ বাতিলের ঘটনা ঘটছে, তবে তা খুবই কম।

সরকার এবং বিজিএমইএর তৎপরতার ফলে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান এবং ব্র্যান্ড প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে তাদের রপ্তানি আদেশ বাতিল না করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। ইউরোপীয় কমিশন তৈরি পোশাকের বাণিজ্যকে টেকসই করতে একটি সমন্বিত নীতি কৌশল ঘোষণা করে। ‘ফেয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল’ নামে এই কৌশলে শ্রমিক বেকার হওয়ার হওয়ার মতো মানবিক বিপর্যয় রোধের পরিকল্পনা রয়েছে। ন্যায্য বাণিজ্য, মানবাধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষায় জোর দিয়ে সুশীল সমাজ ও গোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জার্মানির বৈদেশিক বাণিজ্য সহায়ক বিষয়কমন্ত্রী ড. মুলার আশ্বস্ত করেছেন, তার দেশের কোনো ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি আদেশ প্রত্যাহার করবে না। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিভেন লোফভেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপে বলেন, তার দেশের কোনো ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি আদেশ প্রত্যাহার করে নেবে না। বছরে ৬৫ থেকে ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয় দেশটিতে।

বিভিন্ন দেশের সরকারি পর্যায়ে এ ধরনের পদক্ষেপের বাইরে ক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষ থেকে নতুন করে ক্রয় আদেশের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্র্যান্ড প্রাইমার্ক নতুন করে ৩৭ কোটি পাউন্ডের রপ্তানি আদেশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। করোনার প্রভাবে ১২ দেশে ব্র্যান্ডটির ৩৭৬টি শোরুম বন্ধ রয়েছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ কোটি পাউন্ড। তা সত্ত্বেও করোনা দুর্যোগকালে বাংলাদেশের পাশে থাকার এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আগামী মৌসুমকে কেন্দ্র করে নতুন রপ্তানি আদেশ শুরু করার কথাও জানানো হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে। জার্মানি ভিত্তিক বিশ্বখ্যাত ক্রীড়া পোশাক প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ড পুমা বাংলাদেশে তাদের সরবরাহকারীদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। রপ্তানি আদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের তালিকায় রয়েছে এইচঅ্যান্ডএম, ইনডিটেক্স, ভি এফ, গ্যাপ, কিয়াবি, পিভিএইচ, বেস্টসেলার, টেসকো, জেসিপেনি, এলপিপির মতো বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান।

অ্যাডাম অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল হক মুকুল জানান, তার কারখানায় আগামী শীত মৌসুমের উপযোগী পোশাকের দুটি রপ্তানি আদেশ পেয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের আরও কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে তার কথা হচ্ছে। তিনি জানান, করোনার ঘটনায় চীনের প্রতি সারাবিশ্বের নেতিবাচক মানসিকতা তীব্র হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ। স্বাভাবিক উৎপাদনে ফিরতে পারলে এই সুযোগে বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। বিশ্বব্যাপী করোনার সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর (পিপিই) বড় বাজার তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি। নিজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে ফ্রান্সের একটি বিখ্যাত ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে দেড় লাখ পিস পিপিই সরবরাহ করেছেন তিনি।
টেক্স ওয়েভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশিকুর রহমান তুহিন জানান, জার্মানি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছোট শোরুম খুলে দেওয়া হয়েছে গত সপ্তাহে। এরপর সেখানে অবিশ্বাস্য রকম বেচা-বিক্রি হচ্ছে। এতে শোরুমে পোশাকের টান পড়েছে। চাহিদা তৈরি হওয়ায় ক্রেতারা আবার ফিরতে শুরু করেছেন। নেদারল্যান্ডসেও একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন তার ক্রেতারা। এই সুবাদে নতুন করে রপ্তানি আদেশ পেয়েছেন তিনি। তিনি আরও জানান, শীতের নতুন মৌসুমের রপ্তানি আদেশ এবার আগাম পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এখনো ব্যাপক হারে রপ্তানি আদেশ না এলেও আগামী কয়েক সপ্তায় অনেক বেশি হারে রপ্তানি আদেশ পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, পিপিইর পাশাপাশি নানা রকম ফ্যাশনেবল মাস্ক যুক্ত হয়েছে নতুন রপ্তানি পণ্যের তালিকায়।

শেয়ারবার্তা / হামিদ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ