1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
করোনার ক্ষতি কাটাতে কমানো হচ্ছে করপোরেট কর
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ এএম

করোনার ক্ষতি কাটাতে কমানো হচ্ছে করপোরেট কর

  • আপডেট সময় : শনিবার, ২ মে, ২০২০

করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি কাটাতে ব্যবসায়ীদের জন্য প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এবার করপোরেট কর কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ করপোরেট কর কমানো হতে পারে। কমানো এ কর হার চলতি ও আগামী বাজেটে কার্যকর করা হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) আগেই করপোরেট কর কমানোর দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সে দাবির প্রতিফলন দেখা যায়নি। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চলমান সাধারণ ছুটিতে ব্যাপক ক্ষতিতে পড়েছে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই এ ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে উঠতে চলতি বাজেটের পাশাপাশি আগামী (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট ট্যাক্স কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে সম্প্রতি অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাথে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী করপোরেট কর সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ কমানো যায় কি-না তা এনবিআরের চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চান।’

‘তারপর অর্থমন্ত্রী বর্তমান হারের চেয়ে করপোরেট ট্যাক্স সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ কমিয়ে একটি প্রস্তাব প্রস্তুত করতে বলেন। বর্তমানে এ বিষয়ে কাজ করছে এনবিআর। কমানো এ করপোরেট ট্যাক্স চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের ও আগামী (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেটে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

বর্তমানে ৭ স্তরে করপোরেট কর আদায় হয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে পৃথক হার রয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি ২৫ শতাংশ, তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি ৩৫ শতাংশ, তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, তালিকাবহির্ভূত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪০ শতাংশ, মার্চেন্ট ব্যাংক ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, সিগারেট কোম্পানি ৪৫ শতাংশ, মোবাইল অপারেটরে যথাক্রমে ৪০ ও ৪৫ শতাংশ কর্পোরেট কর বিদ্যমান রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘আমি মনি করি অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত করিতকর্মা লোক, একই সঙ্গে ক্যাপাবেল মন্ত্রী। করোনায় বিশ্বব্যাপী শুধু ব্যবসা নয়, মানুষও থমকে গেছে। ইকোনমির কোনো চাকায় ঘুরছে না, সবই জ্যাম লাগানো। সেই সময়ে ট্যাক্স বাড়িয়ে রেখে লাভ কী? ব্যবসায়ীরা তো কর্মীদের বেতনই দিতে পারছেন না। তাই আমি মনে করি অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে সময় উপযোগী ও যুক্তিযুক্ত প্রদক্ষেপ নিয়েছেন। এ পদক্ষেপকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আমি স্বাগত জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘কমানোর পরও যে ট্যাক্স থাকবে সেটা দিতেও অনেক ব্যবসায়ীর জান বের হয়ে যাবে। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা কঠিন সময় পার করছেন। তবে আমরা আশা করি করোনা দ্রুত চলে যাবে। অর্থনীতির চাকা আবার ঘুরবে। সেই আশার আলো আমরা দেখছি।

এ ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ব্যবসায়ীদের জন্য পাঁচটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এ প্যাকেজ ঘোষণার আগে করোনা ক্ষতিতে ব্যবসায়ীরা কিন্তু ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু প্যাকেজ ঘোষণার পর ব্যবসায়ীরা আবার আশার আলো দেখছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি ফিরে পেয়েছেন।’

এদিকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক দফায় প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে শিল্পঋণের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের ২০ হাজার কোটি টাকা, রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষ ও কৃষকের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা, রফতানি উন্নয়ন ফান্ড ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, প্রিশিপমেন্ট ঋণ পাঁচ হাজার কোটি টাকা, গরিব মানুষের নগদ সহায়তা ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতে বাজেটের অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

যদিও এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের অধিকাংশ টাকার সংস্থানই হবে দেশের ব্যাংকব্যবস্থা থেকে। এরপরও প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণে সুদ ভতুর্কি বাবদ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা এবং রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার সংস্থান বাজেট থেকে হবে। এছাড়া গরিব মানুষের নগদ সহায়তা ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যখাতের জন্য অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকাসহ বেশ কিছু টাকা বাজেট থেকে সংস্থান করা হবে।

এদিকে চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগেই বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে করপোরেট কর কমানোর জোর দাবি জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে সরকারি দুটি প্রতিষ্ঠানও এ হার কমানোর প্রস্তাব করেছিল। এ বিষয়ে বিডা ও বেজা এনবিআরের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) থেকেও একই ধরনের প্রস্তাব করা হয়।

প্রস্তাবে তারা বলে, বাংলাদেশে করপোরেট করের হার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। যে কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়েও বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রতি আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট কিছু খাতে করপোরেট করের হার কমানো হলে বিনিয়োগ বাড়বে।

এ ছাড়াও ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার, বাংলাদেশ চেম্বার, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) করপোরেট করের হার কমানোর প্রস্তাব করেছিল। এসব প্রস্তাব উপেক্ষা করেই বাজেট ঘোষণা করা হয়।

শেয়ারবার্তা / হামিদ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ