করোনা মহামারীর মধ্যে ব্যবসা পরিচালনার জন্য নেয়া ঋণের সুদ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে গণভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ইতিমধ্যে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেছেন, কিন্তু করোনার কারণে এই কয় মাস সব কিছু বন্ধ দেখে আপনাদের তো ঋণের সুদ হয়ে গেছে, সেটার জন্য আপনারা চিন্তা করবেন না। কারণ এই সুদ এখনই নেয়ার কথা না।’
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এই সুদগুলো যাতে স্থগিত থাকে এবং পরে কতটুকু মাফ করা যায় আর কতটুকু আপনারা নিয়মিত দিতে পারেন, সেটি বিবেচনা করা হবে। কাজেই সেটা নিয়ে কেউ দুশ্চিন্তায় ভুগবেন না।
‘এইটুকু আমি বলব, এটিই আমাদের সব থেকে বড় কথা, মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা আর আমাদের জীবন-জীবিকার পথটা উন্মুক্ত রাখা।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সব থেকে বড় কথা হচ্ছে– মানুষের কাজ নেই। বিশেষ করে আমাদের যারা একেবারে হতদরিদ্র, তাদের যেমন আমরা সাহায্য দিচ্ছি, কিন্তু নিম্নবিত্ত… এমনি ছোটখাটো কাজ করে যারা খায়, তাদের জন্যও যথেষ্ট কষ্ট… আমরা জানি।
তিনি বলেন, একবারে ক্ষুদ্র ব্যবসা থেকে শুরু করে; যেমন– মৎস্যচাষি থেকে শুরু করে পোলট্রি, ডেইরি ও কৃষিকাজ যারা করেন বা বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো ব্যবসা বা ক্ষুদ্র ব্যবসা যারা করেন, প্রত্যেকের কথা চিন্তাভাবনা করে এবং অন্যান্য দিকে খেয়াল রেখে আমরা প্রায় এক লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি প্রণোদনা ঘোষণা দিয়েছি এবং সেটি ভাগে ভাগে।
সরকারপ্রধান বলেন, যাদের ছোটখাটো ব্যবসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের কিন্তু এখান থেকে মাত্র ২ পারসেন্ট ইন্টারেস্টে আমরা এই টাকাটা দিয়ে দিচ্ছি, সেই ব্যবসাগুলো যাতে চালু রাখতে পারেন।
রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি খুব ভালো একটা জিনিস দেখলাম। এই জেলাগুলো এখনও সেই রকম সংক্রমিত হয়নি, যথেষ্ট ভালো আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি– এ বিষয়টি আপনাদের ধরে রাখতে হবে। যেন আর কেউ সংক্রমিত না হয় সেদিকে বিশেষভাবে আপনারা দৃষ্টি দেবেন, সেটিই আমরা চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠব। আবার কলকারখানা খুলবে। আমাদের অর্থনীতি আবার সচল হবে। দুর্যোগ আসবে সেটি আবার চলে যাবে। আবার আলো আসবে।
আজ বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জ জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী উল্লিখিত জেলার প্রশাসক, পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন, নার্স, রাজনীতিক, সেনাসদস্য, মসজিদের ইমাম, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি ও ত্রাণ বিতরণ নিয়ে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে চার দফা পৃথক ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৪৮ জেলার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
শেয়ারবার্তা / হামিদ