প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুঁজিবাজারে বিশ্বব্যাপী বিগত কয়েক সপ্তাহে ২৮ থেকে ৩৪ শতাংশ দর পতন ঘটেছে।
রবিবার (০৫ এপ্রিল) সকালে গণভবনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব ও উত্তরণের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পরা করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণে বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর কী ধরনের বা কতটুকু নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলার সময় আসেনি। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব তুলে ধরছি :
ক) আমদানি ব্যয় ও রফতানি আয়ের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অর্থবছর শেষে এই হ্রাসের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খ) চলমান মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ব্যাংক সুদের হার হ্রাসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিলম্বের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত মাত্রায় অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
গ) সার্ভিস সেক্টর বিশেষত হোটেল-রেস্টুরেন্ট, পরিবহন এবং এভিয়েশন সেক্টরের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
ঘ) বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের উপরও বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
ঙ) বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা হ্রাসের কারণে এর মূল্য ৫০ শতাংশের অধিক হ্রাস পেয়েছে; যার বিরূপ প্রভাব পড়বে প্রবাসী-আয়ের উপর।
চ) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে মর্মে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রাক্কলন করেছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
ছ) দীর্ঘ ছুটি বা কার্যত লক-ডাউনের ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের উৎপাদন বন্ধ এবং পরিবহন সেবা ব্যাহত হওয়ায় স্বল্পআয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস এবং সরবরাহ চেইনে সমস্যা হতে পারে।
জ) চলতি অর্থবছরের রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হবে। এরফলে অর্থবছর শেষে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
ঝ) বিগত ৩ বছর ধরে ধারাবাহিক ৭ শতাংশের অধিক হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮.১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং সহায়ক রাজস্ব ও মুদ্রানীতি। সামষ্টিক চলকসমূহের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে।
শেয়ারবার্তা/সাইফুল