বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মারণ করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশির ভাগ এক্সচেঞ্জ হাউস বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বেকার হয়ে পড়েছেন অনেক প্রবাসী। ফলে কমতে শুরু করেছে দেশের রেমিটেন্স প্রবাহ। এখাতে দেখা দিয়েছে অশনি সংকেত। গত দুই মাসে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) রেমিটেন্স কমেছে ৩৬ কোটি ডলার।
সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে। বিশ্বের ৮৫টি এক্সচেঞ্জ হাউসের সঙ্গে অগ্রণীর চুক্তি আছে। বর্তমানে সর্বগ্রাসী করোনার কারণে চুক্তিকৃত বেশির ভাগ এক্সচেঞ্জ হাউসই বন্ধ। বিশেষ করে ইউরোপের কোনো এক্সচেঞ্জ হাউস খোলা নেই। মালয়েশিয়া থেকে রেমিটেন্স আসা বন্ধ রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ থেকে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে আংশিক রেমিটেন্স আসছে।
স্পেনে ‘বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণের উপকারিতা ও প্রবাসীদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা
অগ্রণী ব্যাংকের রেমিটেন্স বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র মহত্তম বলেন, আগে এ সময় প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার রেমিটেন্স পেতাম। যা প্রায় ৮ থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার। এখন তা নেমে এসেছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ রেমিটেন্সে। যা প্রায় ২ থেকে আড়াই মিলিয়ন ডলার।
জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শামস উল ইসলাম বলেন, বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো আগের মতো আর সচল নেই। এখন আংশিক রেমিটেন্স পাওয়া যাচ্ছে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে। প্রবাসীরা অনেক দিয়েছেন। এ দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। দু’পায়ে তারা যেন দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি প্রবাসীদের সহায়তার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, বিদেশে থাকা নিম্নআয়ের বাংলাদেশিদের সরকারিভাবে সহায়তা করা দরকার। অন্তত দুই থেকে তিন মাসের জন্য হলেও কিছু আর্থিক সহায়তা দেয়া প্রয়োজন। তা না হলে তারা বিদেশে টিকতে পারবেন না। আর তারা চলে এলে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও নিম্নমুখী হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে; তা বোঝা যাবে এপ্রিল-মে শেষে। এটা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে বিদেশে যেসব নিম্নআয়ের প্রবাসী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, তাদের টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া যায় কি না, তা গুরুত্ব দেয়া জরুরি।
শেয়ারবার্তা / হামিদ