1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
করপোরেট করহার কমানোর প্রস্তাব করেছে সিএসই ও বিএমবিএ
সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৯ পিএম

করপোরেট করহার কমানোর প্রস্তাব করেছে সিএসই ও বিএমবিএ

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০২০
dse-cse-1

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আসন্ন ২০২০-২১ হিসাব বছরের বাজেটে বিবেচনার জন্য নিজেদের বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছে। উভয়েই তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করপোরেট করহার কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ এবং সিকিউরিটি লেনদেনের ওপর আগের মতো দশমিক ১৫ শতাংশ হারে কর কর্তনের প্রস্তাব করেছে।

সিএসইর প্রস্তাব :

আসন্ন বাজেটে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের জন্য করহার বিদ্যমান ৩৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করেছে সিএসই। বর্তমানে ব্যাংক, বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি ও মোবাইল ফোন অপারেটর ব্যতীত অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২৫ শতাংশ ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর প্রযোজ্য। সিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য এ হার ২০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে।

২০১৯ সালের অর্থ আইন অনুযায়ী, অতালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ২০ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তর করলে হস্তান্তরসংশ্লিষ্ট বছরে প্রযোজ্য আয়করের ওপর ১০ শতাংশ হারে রেয়াত লাভ করে। সিএসই এ সুবিধা শর্তসাপেক্ষে তিন বছর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। এক্ষেত্রে তালিকাভুক্তির প্রথম বছরে ১০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে কর নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে তারা। সিএসই সেসব কোম্পানিকে কর রেয়াতের সুবিধা দিতে বলেছে, যারা আলোচ্য বছরগুলোয় ‘এ’ ক্যাটাগরি বজায় রাখতে পারবে। এসএমই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত করতে এসব কোম্পানিকে প্রথম তিন বছর করমুক্ত রাখা ও পরের বছরগুলোয় ১৫ শতাংশ রেয়াতি হারে কর নির্ধারণ করতে বলেছে সিএসই। এছাড়া উচ্চহারে (২০ শতাংশের বেশি) লভ্যাংশ প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে ২০ শতাংশের বেশি কিন্তু ৩৫ শতাংশের কম হারে লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানির জন্য ৫ শতাংশ ও ৩৫ শতাংশ বা তার বেশি হারে লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিগুলোর জন্য ১০ শতাংশ হারে কর রেয়াত দেয়ার প্রস্তাব করেছে সিএসই।

বর্তমানে বন্ড লেনদেনের ওপর দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ হারে উেস আয়কর আদায় করা হয়। সিএসই বলছে, একটি শক্তিশালী ও পৃথক বন্ড মার্কেট গঠনের লক্ষ্যে বন্ড লেনদেনকে এ বিধান থেকে অব্যাহতি দেয়া প্রয়োজন। বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর রফতানি প্রণোদনার ওপর ১০ শতাংশ হারে উেস কর আদায় করা হয়। সিএসই এ হার কমিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে।

১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য কর্তৃক সিকিউরিটি লেনদেনের ওপর দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ হারে কর আদায় করা হয়। সিএসইর মতে, স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের কাছ থেকে উেস আয়কর কর্তনের হার আগের মতো দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে কর্তিত করকে ৮২(সি) ধারার অধীনে ব্রোকারেজ ব্যবসা থেকে উদ্ভূত সমুদয় আয়ের জন্য চূড়ান্ত করদায় বিবেচনার বিধান করা যেতে পারে।

বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যরা তাদের ব্যবসায়িক লোকসান ষষ্ঠ কর বছর পর্যন্ত ক্যারি ফরোয়ার্ড করতে পারেন। সিএসই এ সময়সীমা বাড়িয়ে আট বছর করার প্রস্তাব করেছে। এক্সচেঞ্জটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মূলধনি মুনাফার ওপর প্রদেয় করহার বিদ্যমান ১০ থেকে কমিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের কথা বলেছে।

ব্যক্তিশ্রেণীর ক্ষেত্রে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে সিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ড ও ইউনিট ফান্ড থেকে লভ্যাংশ হিসেবে পাওয়া ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত করার প্রস্তাব করেছে। বর্তমানে এ দুই ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে এক তালিকাভুক্ত কোম্পানি কর্তৃক অন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার থেকে অর্জিত লভ্যাংশের ওপর করহার ২০ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের কথা বলেছে সিএসই। এক্ষেত্রে রেকর্ড ডেট-পূর্ববর্তী ন্যূনতম তিন মাস ওই শেয়ার ধারণের শর্ত আরোপের কথা বলেছে সিএসই। আর বিদেশী বিনিয়োগকারী কর্তৃক তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার থেকে অর্জিত লভ্যাংশের ওপর কর কর্তনের হার কমিয়ে কোম্পানির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে সিএসই। ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সর্বোচ্চ সীমা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে সিএসই। এক্সচেঞ্জটির মতে, ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সময় সংশ্লিষ্ট কোম্পানি যে ১০ শতাংশ হারে উেস আয়কর কেটে রাখে, তা বিনিয়োগকারীদের জন্য চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের জন্য রেয়াতযোগ্য বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা তাদের মোট করযোগ্য আয়ের ২৫ শতাংশ, যা ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি নয়। সিএসই এ সীমা বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। এক্সচেঞ্জটি ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের অর্জিত বাড়িভাড়া ভাতার করমুক্ত সীমা বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ বা মাসিক ৩০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে। এছাড়া এ শ্রেণীর করদাতাদের জন্য ইউটিলিটি বিলগুলোকে মেডিকেল ও বাড়িভাড়ার মতো অনুমোদনযোগ্য ব্যয় হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলেছে সিএসই।

বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে কোনো ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারী কর্তৃক কোনো শেয়ার, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড অথবা অন্য কোনো সিকিউরিটিজে বিনিয়োগে গৃহীত মার্জিন ঋণ ও ঋণের সুদ ট্রেকধারী কর্তৃক মওকুফ করা হলে মওকুফজনিত সুবিধার মোট অংক ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত করযোগ্যতার আওতাবহির্ভূত রাখা হয়েছে। এর বেশি টাকার জন্য অতিরিক্ত অংকের করযোগ্যতার বিধান প্রযোজ্য। সিএসই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো ট্রেকহোল্ডার কর্তৃক মওকুফকৃত যেকোনো পরিমাণ মার্জিন ঋণ ও এর সুদ কর আওতার বাইরে রাখা এবং এ সুবিধা ব্যক্তি ও কোম্পানি শ্রেণীর করাদাতা সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার প্রস্তাব করেছে।

এছাড়া সিএসই সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে (যেমন পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ইত্যাদি) অর্থায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পুঁজিবাজার থেকে সংস্থান করার প্রস্তাব করেছে।

বিএমবিএর প্রস্তাব :

আসন্ন বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট করহার ২৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের সুপারিশ করেছে বিএমবিএ। এছাড়া এ ধরনের কোম্পানির ক্ষেত্রে ভ্যাটহার ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে তারা।

বর্তমানে পুঁজিবাজারের প্রতিটি লেনদেনের ওপর দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ হারে কর কর্তন করা হয়। আগে এ হার ছিল দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ। বিএমবিএ লেনদেনের ওপর আগের হারে কর কর্তনের সুপারিশ করেছে।

বর্তমানে লভ্যাংশ প্রদানের সময় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর কর্তন করা হয়। পরবর্তী সময়ে লভ্যাংশ গ্রহীতার ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্নের সময় এর ওপর আবার প্রযোজ্য হারে কর প্রদান করতে হয়। এক্ষেত্রে অগ্রিম করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনার সুপারিশ করেছে বিএমবিএ।

বর্তমানে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ৩৫ শতাংশ ও সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানিগুলোকে ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। বিএমবিএ বলছে, বাজার মধ্যস্থতাকারী তিনটি প্রতিষ্ঠানের করহারে সমতা থাকা উচিত। সংগঠনটি মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষেত্রে করহার ২৫ শতাংশ নির্ধারণের সুপারিশ করেছে।

এছাড়া করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএমবিএ মূলধারার বাইরে থাকা/অপ্রদর্শিত অর্থ কমপক্ষে তিন বছর বিনিয়োগের শর্তে এবং সাড়ে ৭ শতাংশ হারে কর প্রদানসাপেক্ষে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতির মূলধারায় যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে। সংগঠনটি মনে করছে, এর মাধ্যমে জনজীবন তথা অর্থনীতি সর্বত্র উন্নতি ঘটতে পারে।

শেয়ারবার্তা / রিয়াজ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ